আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ১৪ জুন ২০২৫ : তেহরান: মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার জবাবে ইরান এখন কেবল ইসরায়েল নয়, ইসরায়েলকে সমর্থনকারী পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক ঘাঁটি ও যুদ্ধজাহাজের বিরুদ্ধেও হুমকি দিচ্ছে। তেহরান ঘোষণা করেছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটি ও জাহাজ তাদের প্রতিশোধের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ইরান জানিয়েছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা ফ্রান্স যদি ইসরায়েলকে সহায়তা করে, তবে এই অঞ্চলে তাদের সামরিক ঘাঁটি ও জাহাজের ওপর হামলা চালানো হবে।
শুক্রবার মধ্যরাতে ইসরায়েল তেহরানে বড় ধরনের বিমান হামলা চালায়, যাতে আবাসিক এলাকায় হামলার ফলে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু। এছাড়া ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি ও হ্যাঙ্গারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জবাবে শনিবার সকালে ইরান ইসরায়েলের সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনাগুলোতে পাঁচ দফায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, যাতে ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইরান রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করেছে, ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দেওয়া দেশগুলোকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের ছোড়া কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রতিহত করার কথা স্বীকার করেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ইসরায়েলকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে যুক্তরাজ্য সামরিক সহায়তা না দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি দিয়েছে, মার্কিন নাগরিক, ঘাঁটি বা অবকাঠামোর ওপর হামলা হলে ইরানকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন ও নিরীহ বেসামরিক মানুষ হত্যার জন্য ইসরায়েল ও তার মিত্রদের মূল্য দিতে হবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইরান যদি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়ে যায়, তবে তেহরানকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য এখন এমন এক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে, যেখানে যেকোনো ভুল পদক্ষেপ পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের সূচনা করতে পারে। এতে পশ্চিমা সামরিক শক্তিগুলোও জড়িয়ে পড়তে পারে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
এ.আই/এম.আর