ঢাকা, ০৭ জুন ২০২৫ : কোরবানি শেষে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে পশুর চামড়া সাভারে আসতে শুরু করেছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে এই চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। বিক্রেতারা বলছেন, চামড়ার মান তুলনামূলক ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, লোকসানের অজুহাতে আড়তদাররা নির্ধারিত দামেও চামড়া কিনতে চাইছেন না।
শনিবার (০৭ জুন) ঢাকার মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও হাজারীবাগ এলাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকায় কাঁচা গরুর চামড়া মানভেদে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একাধিক আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাজার না বুঝে বেশি দামে চামড়া কিনে আনেন। তবে চামড়ার বাজার বর্তমানে ভালো নয়।
লালবাগে কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মানভেদে গরুর চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় কিনছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরিসহ প্রায় ৪০০ টাকা খরচ হয়। বাজার ভালো না থাকায় তারা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম দামে চামড়া কিনছেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কোরবানি ঈদে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন ট্যানারি মালিকেরা। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্যানারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি কাঁচা চামড়া কিনছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, এ বছর চামড়ার সরবরাহ ভালো হলেও ছোট গরুর চামড়ার পরিমাণ বেশি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি চামড়ার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি বলে দাবি করেন তিনি।
সাভার কাঁচা চামড়া আড়ত মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এমদাদুল হক (সোহরাব) বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা সম্ভব নয়। কারণ, চামড়ার সঙ্গে লবণ ও শ্রমিক খরচ যুক্ত হলে লোকসানের আশঙ্কা থাকে।
বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশারফ হোসেন কালবেলাকে বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচার রোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। সীমান্তে নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২৫ মে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার কোরবানির পশুর চামড়ার নতুন দাম নির্ধারণ করে। ঢাকায় কাঁচা গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া, খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ২২ থেকে ২৭ টাকা এবং বকরির চামড়ার দাম ২০ থেকে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গত বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ছিল। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এ.আই/এম.আর