আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একসময় গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করা লি জে-মিয়ং এখন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে। তার এই চমকপ্রদ যাত্রা শুধু দক্ষিণ কোরিয়াতেই নয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। শিশু বয়সে পরিবারের সহায়তার জন্য স্কুল ছেড়ে কারখানায় কাজ শুরু করেছিলেন লি। এক দুর্ঘটনায় তার কনুই মারাত্মকভাবে জখম হলেও, স্কলারশিপের মাধ্যমে আইন পড়ে আইনজীবী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এই অভিজ্ঞতাই তাকে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে গড়ে তুলেছে।
লি জে-মিয়ংয়ের উত্থান—গার্মেন্টসকর্মী থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট
লি’র রাজনৈতিক জীবন নাটকীয়তায় ভরপুর। ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে ইউন সুক ইয়েওলের কাছে হারলেও, এবার তিনি ইউনের স্থলাভিষিক্ত হতে প্রস্তুত। ইউনকে সামরিক আইন জারির অভিযোগে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণের পর ৩ জুন ২০২৫-এর নির্বাচনের পথ খুলে যায়, যেখানে লি ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০২৪ সালে এক সমাবেশে তার গলায় ছুরি হামলার ঘটনা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি বেঁচে ফিরে জনসমর্থন আরও বাড়িয়েছেন।
লি’র প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) শিল্পকে বিশ্বের শীর্ষ তিনে নিয়ে যাওয়া এবং সামরিক আইন জারির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা। তিনি সিউংনামের মেয়র থাকাকালীন দেশের বৃহত্তম কুকুর মাংস বাজার বন্ধ করেছিলেন এবং গিয়ংগি প্রদেশের গভর্নর হিসেবে সফলতা দেখিয়েছেন।
তবে, তার বিরুদ্ধে রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে অনিয়ম ও নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, যা তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী কিম মুন-সু তার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, লি বলেন, “ঠান্ডা রুমে বসে রাস্তায় কাঁপতে থাকা মানুষদের কথা ভাবা যায়। কিন্তু তাদের কষ্ট বুঝতে হলে, নিজেও একসময় সেখানে থাকতে হয়।”
দক্ষিণ কোরিয়ার অনেকে মনে করেন, গার্মেন্টসকর্মী থেকে উঠে আসা লি জে-মিয়ংই হতে পারেন তাদের পরবর্তী রাষ্ট্রপ্রধান।
এ.আই/এম.আর