০৫ জুন, ২০২৫ : মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীরের গেজেট বাতিল ও ভাতা বন্ধের ঘটনায় আবারও আদালতে রিট দায়ের করা হয়েছে। তিনি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) আবেদনও করেছেন। গত মার্চে জামুকায় এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নঈম জাহাঙ্গীর কাগজপত্র পেশ করে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বর্তমানে তিনি জামুকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলায়েত হোসেন বলেন, “নঈম জাহাঙ্গীর একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বিএনপির সমর্থক হওয়ায় আওয়ামীপন্থি কিছু ব্যক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে সখ্যতা করে তাঁর গেজেট বাতিল করেছেন। যাদের ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে, তারা সমিতির অবৈধ সদস্য। এসব কাজে প্রভাব খাটিয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদুল ইসলাম।”
নঈম জাহাঙ্গীর কালবেলাকে বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা সমিতির কিছু সদস্য মোর্শেদের নেতৃত্বে প্রতিহিংসার বশে ষড়যন্ত্র করে আমার গেজেট বাতিল করেছে। প্রায় ১০ বছর পর আমার ভাতাও বন্ধ করা হয়েছে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নির্দেশে। সমিতির সদস্যদের অধিকার নিয়ে কথা বলায় আমার বিরুদ্ধে এই অন্যায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ২৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে প্রায় ১৬ একর জমি বরাদ্দ দেয়। ২০১০ সালে বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু হলে সমিতির সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকলে বিএনপিপন্থি তকমা দিয়ে কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ১৮ জনকে অবৈধভাবে সদস্য করে তাঁদের ফ্ল্যাট দেওয়া হয়।
অবৈধভাবে ফ্ল্যাটপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের পিয়ন মো. জাহাঙ্গীর আলম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের দুই মেয়ে মেহেরীন মুনজারিন ও মেহেরীন মুসফেকিন, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা নুরজাহান আহম্মেদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মেসবাউল হক সাচ্চুসহ অনেকে।
অবৈধ ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিলে সমিতির বঞ্চিত সদস্যরা আদালতে রিট করেছেন এবং জাতীয় গৃহায়নে আবেদন জানিয়েছেন। জাতীয় গৃহায়নের চেয়ারম্যান নূরুল বাসির বলেন, “যাদের নামে জমি বরাদ্দ ছিল না, তাঁদের ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে রিট করা হয়েছে। আদালত এটা দেখবেন। গৃহায়নের কাজ চলমান রয়েছে।”
এদিকে, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দুর্নীতি, অনিয়ম ও ছাত্র-জনতা হত্যার অভিযোগে মোর্শেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এ.আই/এম.আর