Monday, June 2, 2025

৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা: বছরে ২৪০০ কোটি টাকা ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে

০২ জুন, ২০২৫ : দেশে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলছে। ১৯৯৪ সালে সরকারি তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার। ২০২৪ সালে এসে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার। এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা বছরে প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) জানায়, বর্তমানে ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন। প্রতিজন মুক্তিযোদ্ধা মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা পান। এছাড়া, দুই ঈদে ১০ হাজার টাকা করে, ২৬ মার্চে ৫ হাজার টাকা এবং বৈশাখে ২ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয়। এ হিসেবে, প্রতি মুক্তিযোদ্ধা বছরে সর্বনিম্ন ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ভাতা পান। ফলে, ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বছরে প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া, যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা আরও বেশি ভাতা পান।
এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করতে জামুকা উদ্যোগ নিয়েছে। এর প্রথম ধাপ হিসেবে কুমিল্লায় ২ জুন শুনানি শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় ৩১ জনের বিরুদ্ধে শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে কুমিল্লা সার্কিট হাউজে। জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন জানান, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করতে মাঠ পর্যায়ে তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণ যাচাই করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কুমিল্লায় শুনানি শুরু হয়েছে, যেখানে নিখুঁতভাবে তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করা হবে।
জুলাই আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক দায়িত্ব নেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দেন। এরপর জেলা ও উপজেলা থেকে হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে। মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছে এসব অভিযোগ যাচাই করতে।
জামুকার তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে, কারণ তাদের বয়স ১২ বছর ৬ মাসের কম ছিল। গত ১৫ বছরে মোট ৩৯২৬ জনের গেজেট বাতিল হয়েছে। এছাড়া, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছেন ৮৯ হাজার ২৩৫ জন।
এ.আই/এম.আর

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.