ইসরায়েলে ইরানের ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে চালানো এই হামলায় ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, হামলার পর তেল আবিবের কাছে বাট ইয়াম শহরে একটি আবাসিক ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর অন্তত ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া, হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, শনিবার মধ্যরাত ও রোববার ভোরে ইরান দুই দফায় এই হামলা চালায়। হামলায় ব্যবহৃত দ্রুতগতির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিব, হাইফা, জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে আঘাত হেনেছে। বাট ইয়ামের ওই আবাসিক ভবনটি ধসে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে, এবং স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড আদম (এমডিএ) জানিয়েছে, শনিবার রাতভর চলা হামলায় প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছেন। তেল আবিবের ইচিলোভ মেডিকেল সেন্টারে ২৫ জন আহত ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা মাঝারি, বাকিরা শঙ্কামুক্ত। হাইফার রামবাম মেডিকেল সেন্টারে ১৩ জন আহত চিকিৎসাধীন, যাদের অধিকাংশের আঘাত মাঝারি ও হালকা। এছাড়া, আটজন মানসিক আঘাতে (অ্যাংজাইটি) ভুগছেন।
ইসরায়েলের অন্যান্য হাসপাতালগুলোতেও আহতদের ভিড় দেখা গেছে। ইচিলোভ হাসপাতাল আরও জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় পাঁচজন আহত রোগী তাদের কাছে ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা মাঝারি এবং বাকি চারজন হালকা আঘাতে আক্রান্ত।
ইরানের এই হামলা ইসরায়েলের পূর্ববর্তী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এবং প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির হুমকি নস্যাৎ করার লক্ষ্যে তাদের হামলার কথা জানিয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যে এই পাল্টাপাল্টি হামলা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং বিশ্ব নেতারা উভয় দেশকে সংঘর্ষ বন্ধ করে শান্তি ও কূটনীতির পথে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ.আই/এম.আর