ঢাকা, ১৭ মে ২০২৫: পদ্মা ব্যাংকে আমানত রেখে নিঃস্ব হওয়া ভুক্তভোগীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ ফেরতের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন। শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে আমানতকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অর্থ ফেরতের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমাসহ রোডম্যাপ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান। তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, পাসপোর্ট বাতিল ও সম্পদ জব্দের দাবিও তুলেছেন।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি চক্র পদ্মা ব্যাংক থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। মো. ইব্রাহিম বলেন, “এটি দেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ ব্যাংকিং দুর্নীতি। হাজার হাজার পরিবারের সঞ্চয়, পেনশন ও ব্যবসার টাকা লুট করা হয়েছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে তারেক রিয়াজ খান পদত্যাগের সময় অনাপত্তিপত্র পান এবং এখনো ব্যাংকিং খাতে সক্রিয় রয়েছেন।
মার্জিয়া আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, তার বাবা পরিবারের ভবিষ্যতের জন্য ব্যাংকে টাকা রেখেছিলেন। কিন্তু তার মা কিডনি রোগে ভুগছেন, এবং ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে না পারায় চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে টাকা ফেরতের আকুতি জানান। জুয়েলা আক্তার বলেন, “ব্যাংকে গেলে দুর্ব্যবহার করা হয়, ধমক দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। এই যন্ত্রণার শেষ কোথায়?”
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিস সরাফাত দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকের ৬৫ শতাংশ শেয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেন। তিনি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে আর্থিক অনিয়মে জড়ান। ফয়সাল ভূঁইয়া অভিযোগ করেন, চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও তারেক রিয়াজ খান ভুয়া নথির মাধ্যমে ঋণ বিতরণ ও প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ২০১৯ সালে তারেক রিয়াজের যোগদানের সময় ব্যাংকের হাতে ছিল ১২০০ কোটি টাকা, কিন্তু ২০২৪ সালে তার পদত্যাগের সময় ব্যাংক ঋণাত্মক ৪০০ কোটি টাকায় নেমে যায়।
ভুক্তভোগীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের দায় এড়ানোর সমালোচনা করে বলেন, লাইসেন্স প্রদানকারী হিসেবে তাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা দ্রুত সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এ.আই/এম.আর