Friday, May 16, 2025

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাকরাইলে টানা অবস্থান, জুমার পর গণঅনশন

ঢাকা, ১৬ মে ২০২৫: চার দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 

শুক্রবার (১৬ মে) সকাল থেকেও তারা রাজপথে অটল রয়েছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মোড় ছেড়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ১০টায় কাকরাইল মোড়ে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে, টানা রাজপথে অবস্থানের কারণে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ায় সমাবেশটি এক ঘণ্টা বিলম্বে শুরু হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন জানান, “জুমার নামাজের পর থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গণঅনশনে বসবেন। সরকারের সুস্পষ্ট ঘোষণা ছাড়া আমরা রাজপথ ছেড়ে ক্যাম্পাসে ফিরব না।” তিনি আরও বলেন, সরকারি কোনো এজেন্সি তাদের তুলে নিলেও আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট ছাড়া অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন এবং ১৪ মে পুলিশি হামলার তদন্ত ও বিচার।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে লংমার্চ করার সময় কাকরাইল মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হন। এরপর থেকে কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি যৌক্তিক এবং আবাসন তাদের অধিকার। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, “আমরা দিনের পর দিন আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের দাবি মেনে নিতেই হবে।”
এদিকে, কাকরাইল মসজিদ আন্দোলনকারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীরা মাত্র ৪০ টাকায় খাবার, পানি এবং প্রয়োজনীয় সুবিধা পাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. তাজাম্মুল হক দুপুরের খাবারের বিল পরিশোধ করেছেন বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারীরা ১৪ মে’কে ‘জবি কালো দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং প্রতি বছর এই দিনটি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা এই আন্দোলনকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এ.আই/এম.আর

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.