আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ১২ মে ২০২৫ : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, যা যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।
সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ট্রাম্প বলেন, “আমরা একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘাত প্রতিরোধ করেছি। আমি মনে করি, যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এমন একটি যুদ্ধ শুরু হতো, তাহলে তা ভয়াবহ হতো—লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হতো। ওয়াশিংটন এটি রুখতে পেরেছে, এতে আমি গর্বিত।”
ট্রাম্প আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তিনি মনে করেন, দুই দেশের দশকের পর দশক ধরে চলা বৈরী সম্পর্কের অবসানে বাণিজ্য হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর পন্থা। তিনি বলেন, “উত্তেজনা প্রশমনে বাণিজ্য হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর পথ। আমি ভারত ও পাকিস্তানকে বলেছি, ‘আমরা আপনাদের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে চাই। উত্তেজনা বন্ধ করুন। আপনারা থামলে আমরা বাণিজ্য করব, না থামলে কোনো বাণিজ্য হবে না।’”
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। নিহতরা সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)।
এ ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিন্ধু নদের পানি বণ্টনচুক্তি বাতিল ও পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়। পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ ও ভিসা বাতিলের মতো পাল্টা পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ভারত পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালায়, যেখানে ৭০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয় বলে ভারত দাবি করে। তবে পাকিস্তানের দাবি, ৩১ জন নিহত ও ৫৭ জন আহত হয়েছে।
এর তিন দিন পর পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ (অর্থ: সীসার প্রাচীর) শুরু করে। তবে মার্কিন কর্মকর্তাদের চাপে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় এবং শনিবার থেকে তা কার্যকর হয়।
এ.আই/এম.আর