আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ৩০ মে ২০২৫ : মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে সৌদি আরব ইরানের কাছে একটি কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে। ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছাতে ইরানকে সতর্ক করেছেন সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুলআজিজ। এই বার্তা তার ছোট ছেলে ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের মাধ্যমে তেহরানে পৌঁছে দেওয়া হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৭ এপ্রিল তেহরানের প্রেসিডেন্ট ভবনে এক গোপন বৈঠকে প্রিন্স খালিদ এই বার্তা পৌঁছে দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান, সেনাপ্রধান মোহাম্মদ হোসেইন বাঘেরি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।
সৌদি ও ইরানি সূত্র জানায়, বাদশা সালমান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত পারমাণবিক চুক্তিকে গুরুত্ব না দিলে ইরান ইসরায়েলি হামলার মুখে পড়তে পারে। তিনি ইঙ্গিত দেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্রুত চুক্তি চান এবং তার ধৈর্য সীমিত। প্রিন্স খালিদ স্পষ্টভাবে সতর্ক করে বলেন, কূটনৈতিক আলোচনা বন্ধ হলে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের মিত্র হামাস ও হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়েছে। সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়া এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের আঞ্চলিক অবস্থানও দুর্বল। এই পরিস্থিতিতে সৌদি আরব তাদের কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে।
কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টারের বিশ্লেষক মোহনাদ হেজ আলি বলেন, ইরানের দুর্বলতা সৌদি আরবকে কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দিয়েছে। সৌদি আরব যুদ্ধ এড়াতে চায়, কারণ তা তাদের অর্থনীতি ও ভিশন ২০৩০-এর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
২০২৩ সালে চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি-ইরান সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হলেও পারস্পরিক অবিশ্বাস এখনো রয়ে গেছে। তাই প্রিন্স খালিদের তেহরান সফরকে মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে সৌদি আরব বা ইরান কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
এ.আই/এম.আর