নারায়ণগঞ্জ, ২২ মে ২০২৫ : নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো কোনো ঘুষ ছাড়াই ৯২ জন ঠিকাদারকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে, যা স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। বুধবার (২১ মে) নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা নিজ হাতে ঠিকাদারদের হাতে নতুন লাইসেন্স তুলে দেন।
ঠিকাদাররা কোনো ঘুষ ছাড়াই লাইসেন্স পেয়ে জেলা প্রশাসকের প্রশংসা করেছেন। তারা জানান, এই প্রথম তারা শুধুমাত্র সরকার নির্ধারিত ফি ৫,৭৫০ টাকা প্রদান করে সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাইসেন্স পেয়েছেন। অতীতে লাইসেন্স নবায়ন বা নতুন লাইসেন্স পেতে ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হতো।
মেসার্স আলী ইন্টারন্যাশনালের প্রোপ্রাইটর মো. আলী আজগর বলেন, “নারায়ণগঞ্জে আমার ৪০ বছরের ঠিকাদারি জীবনে এই প্রথম এক পয়সা ঘুষ ছাড়াই লাইসেন্স পেয়েছি। আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে শুধু সরকারি ফি দিয়েই লাইসেন্স হাতে পেয়েছি।”
একইভাবে, মেসার্স মুলতাযাম ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর মো. রহুল আমিন দিপু বলেন, “আগে লাইসেন্স পেতে অফিসে দালালদের পেছনে ঘুরতে হতো এবং মোটা অঙ্কের ঘুষ দিতে হতো। আজ আমরা ৯২ জন ঠিকাদার জেলা প্রশাসকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে শুধু নির্ধারিত ফি দিয়ে লাইসেন্স পেয়েছি। এটি প্রমাণ করে যে একজন ডিসি চাইলে ঘুষ-দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়া সম্ভব।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “জনগণের কল্যাণে সরকারি অর্থ যেন সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়, সেটি নিশ্চিত করা আপনাদের প্রধান দায়িত্ব। কাজের গুণগত মান বজায় রাখতে হবে। যেমনভাবে আজ আপনারা ঘুষ ছাড়া লাইসেন্স পেয়েছেন, তেমনি কোনো ঘুষ ছাড়াই কাজ পাওয়া—এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “সৎ থেকে ভালো কাজ করলে মানুষ আপনাদের কাজের কথা আজীবন মনে রাখবে। দুর্নীতিকে না বলুন, দায়িত্বকে হ্যাঁ বলুন।”
অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইনসহ জেলা পরিষদের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ.আই/এম.আর