ঢাকা, ১ মে, ২০২৫: জাপান বাংলাদেশের কাছে সামরিক অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রচেষ্টার অংশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ মাসের শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে। এ ছাড়া, আগামী ১৫ মে টোকিওতে অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকে এই প্রস্তাবের পাশাপাশি দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এফওসি বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন, আর জাপানের পক্ষে উপস্থিত থাকবেন সিনিয়র ডেপুটি ফরেন মিনিস্টার আকাহরি তাকিশি। এ ছাড়া, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টা ২৯-৩১ মে জাপান সফর করবেন। তিনি টোকিওতে দুই দিন এবং ওসাকায় এক দিন অবস্থান করতে পারেন। এ সময় তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকার অগ্রাধিকার: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, এবং জনকেন্দ্রিক সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগ দেবে। ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু, মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সংকট, এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়গুলোও আলোচনায় উঠবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বৃদ্ধিতে ঢাকা গুরুত্ব দেবে।
টোকিওর এজেন্ডা: জাপান এশিয়ায় তাদের অস্ত্রের বাজার প্রসারে আগ্রহী এবং এফওসি বৈঠকে অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে জোর দেবে। এ ছাড়া, বাংলাদেশের চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে জাপান তাদের অবস্থান তুলে ধরবে, যেহেতু চীনের সঙ্গে জাপানের দীর্ঘদিনের ভূমি বিরোধ রয়েছে। সূত্র জানায়, মধ্যাহ্নভোজের আগে চীন ইস্যুতে আলোচনা হবে।
চীন নিয়ে উদ্বেগ: গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের চীন সফরের মাধ্যমে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো সম্প্রসারিত হয়েছে। জাপান এই প্রেক্ষাপটে এফওসি বৈঠকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করবে।
বাংলাদেশ জাপানের অস্ত্র কিনবে কিনা—এমন প্রশ্নে সূত্র জানায়, দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় উভয়পক্ষ তাদের এজেন্ডাকে গুরুত্ব দেবে, তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে উচ্চ পর্যায়ের সফর এবং সময় প্রয়োজন।
বুধবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিবের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তারা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উইংয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে জাপানের প্রস্তাব এবং বাংলাদেশের এজেন্ডা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এফওসি বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টার সফর বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ.আই/এম.আর