Friday, May 16, 2025

দিল্লি থেকে ৪০ রোহিঙ্গাকে ধরে সাগরে ফেলে দিল ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ১৬ মে, ২০২৫ : জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনে জানা গেছে, ভারত তার রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ৪০ জনকে আটক করে তাদের আন্দামান সাগরে ফেলে দিয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে তাদের মিয়ানমারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয়, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ তুলেছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভারত সরকার মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেছে। গত ৬ মে দিল্লিতে আটক এই ৪০ জনকে চোখ বেঁধে প্রায় ১,৫০০ মাইল দূরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তোলা হয়, যা মিয়ানমারের তানিনথারি অঞ্চলের দিকে যাত্রা করে।
জাহাজে থাকা রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, তানিনথারির কাছে পৌঁছে তাদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয় এবং সাগরে ঝাঁপ দিয়ে মিয়ানমারের একটি দ্বীপে সাঁতরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই দলে কিশোর, বয়স্ক এবং ক্যানসার রোগীও ছিলেন। ভারতীয় নৌসেনারা তাদের মারধর ও নির্যাতন করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে ভাগ্যক্রমে, সবাই জীবিত অবস্থায় তীরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
ভারতের মানবাধিকার সংগঠন পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ (পিইউসিএল) এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছে, দুর্বল মানুষদের ওপর চরম নিষ্ঠুরতা প্রয়োগ করা হয়েছে। মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ এই ঘটনাকে “ভয়াবহ” আখ্যা দিয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারত রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না এবং তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে। দেশটির আইনে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কোনো বিধান নেই, ফলে সব রোহিঙ্গাকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হয়। ভারতে প্রায় ২২,০০০ রোহিঙ্গা জাতিসংঘের শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে ভারত ৭৮ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ ইন করে। গুজরাট থেকে আটক এই মানুষদের সুন্দরবনে ফেলে দেওয়া হয়। ১০ মে বাংলাদেশ তাদের উদ্ধার করে। তারা জানিয়েছে, তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং খাবার দেওয়া হয়নি।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো ভারতের এই কঠোর নীতির সমালোচনা করে বলেছে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক নিধন থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণ করা উচিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ঘটনার জবাবদিহি দাবি করেছে।

এ.আই/এম.আর

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.