নীলফামারী, ২৬ মে ২০২৫: তিস্তা নদীতে আগামী ৩০ ও ৩১ মে উজান থেকে ঢল নামার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের আসাম রাজ্যে ২৯ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত ৫০০ থেকে ৮০০ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে ভারতের গজলডোবা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়া হতে পারে, যা বাংলাদেশের তিস্তা নদীতে হঠাৎ প্রচণ্ড ঢল নামাতে পারে।
রোববার (২৫ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মোস্তফা কামাল পলাশ এই সতর্কবার্তা জানান। তিনি বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি সুপারিশ করেছেন, তিস্তা ব্যারাজের উজানে আটকে থাকা পানি ২৯ মের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে সর্বনিম্ন স্তরে নামিয়ে আনা হোক। এতে আকস্মিক ঢলের ধাক্কা সামলানো সহজ হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, গজলডোবা বাঁধের গেট খোলার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশের বেশি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে তিস্তার নিচু চরাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, গত দুই দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি অনেকটা শুকিয়ে গেছে। গত ১৫ মে থেকে ভারতের দো-মহনী পয়েন্ট থেকে পানির তথ্য আদান-প্রদান শুরু হয়েছে। ২৫ মে বিকেলের তথ্য অনুযায়ী, গজলডোবা ও দো-মহনী পয়েন্টে পানির স্তর অনেক নিচে রয়েছে। ফলে বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজেও পানির প্রবাহ কমে গেছে। তিনি আরও বলেন, তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট গত সাত দিন ধরে খোলা রয়েছে এবং আগাম বর্ষার কারণে যেকোনো সময় পানির প্রবাহ বাড়তে পারে।
মোস্তফা কামাল পলাশের সতর্কবার্তা প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীর সঙ্গে আসামের সরাসরি সংযোগ না থাকলেও, সিকিম, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার হয়ে তিস্তার পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আসামে ভারী বৃষ্টি হলে তার প্রভাব সিকিম ও তিব্বতের দিকে গিয়ে তিস্তায় পড়তে পারে। এছাড়া, আসামের বৃষ্টির পানি ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে কুড়িগ্রামে ঢল নামাতে পারে। তাই তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ২৯ মে’র আগেই তিস্তা ব্যারাজের উজানে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে সম্ভাব্য বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়।
এ.আই/এম.আর