চট্টগ্রাম, ২৫ মে ২০২৫: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান কর্মবিরতির কারণে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাস হলেও আমদানিকারকরা বন্দর থেকে পণ্য ছাড় করতে পারছেন না, ফলে বন্দরে কনটেইনার জটের সৃষ্টি হয়েছে।
কাস্টমসের শুল্কায়ন ও পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বন্দরের কনটেইনার সংরক্ষণ ক্ষমতা প্রায় সীমায় পৌঁছে গেছে। বন্দর কর্মকর্তাদের মতে, বন্দরে মোট ৫৩ হাজার টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) কনটেইনার রাখার সক্ষমতা থাকলেও, অপারেশনাল সুবিধার জন্য ৪৫ হাজার টিইইউসের বেশি রাখা সম্ভব নয়। বর্তমানে বন্দরে প্রায় ৪১ হাজার টিইইউস কনটেইনার জমে আছে, এবং প্রতিদিন গড়ে এক হাজার টিইইউস কনটেইনার খালাস হচ্ছে। কিন্তু আমদানিকারকরা একই হারে পণ্য ছাড় করতে না পারায় জট আরও তীব্র হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাস বন্ধ করতে হতে পারে।
গত তিন মাসে কনটেইনারবাহী গাড়িচালক ও শ্রমিকদের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং সর্বশেষ ১৪ মে থেকে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে বন্দরে কনটেইনারের সংখ্যা ৩৬ হাজার থেকে বেড়ে ৪১ হাজার টিইইউস ছাড়িয়েছে। এর ফলে পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আমদানি, যা বন্দরের মোট আমদানির ৩০ শতাংশ, বিলম্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমদানিকারকদের স্টোর রেন্ট, ডেমারেজ, এবং ডিটেনশন চার্জ বাবদ বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে।
বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “এনবিআরের কর্মবিরতির কারণে কাঁচামাল হাতে পাওয়া বিলম্বিত হচ্ছে, যা রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।” সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ফাল্গুনী ট্রেডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল খান জানান, কনটেইনার ভেদে চারগুণ পর্যন্ত মাশুল দিতে হচ্ছে।
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “শুল্কায়ন বন্ধ থাকায় ডেলিভারির গতি কমে গেছে। এভাবে চললে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।” চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে আমদানি-রপ্তানির ৯৫ শতাংশ শুল্কায়ন হওয়ায় এই কর্মবিরতি বন্দরের কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে।
এ.আই/এম.আর