আন্তর্জাতিক, ২৫ মে ২০২৫ : বিশ্বজুড়ে প্রভাব বিস্তার এবং কৌশলগত অবস্থান জোরদার করতে বাংলাদেশসহ একাধিক দেশে সামরিক অবকাঠামো নির্মাণে আগ্রহী চীন—এমন দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ) তাদের সদ্য প্রকাশিত ‘বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন’ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) বাংলাদেশে সামরিক অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, এই তালিকায় রয়েছে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিউবা, কেনিয়া, গিনি, সিসিলিস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া, নামিবিয়া, মোজাম্বিক, গ্যাবন, পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং তাজিকিস্তান।
ডিআইএর দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত প্রভাব ও সামরিক উপস্থিতির বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব হিসেবে চীন তার বৈশ্বিক সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এগোচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো পূর্ব এশিয়ায় প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈশ্বিক নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেওয়া।
এছাড়া, চীন তাইওয়ানকে তার মূল ভূখণ্ডে একীভূত করতে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে। এই লক্ষ্য অর্জনে চীন কূটনৈতিক, সামরিক, তথ্য এবং অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার পথ বেছে নিয়েছে।
মার্কিন সংস্থাটির মতে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার দেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এবং তার বাইরেও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে সমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রস্তুত করছেন। এছাড়া, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জোট ও মিত্রদের মধ্যে আস্থা ও জনপ্রিয়তা কমানোর দিকেও মনোযোগ দিচ্ছে। বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত নীতির পরিবর্তন সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে এবং তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ফিলিপাইন ও তাইওয়ানের মতো অঞ্চলগুলোতে, যেগুলো চীনের নিরাপত্তা ও প্রভাব বলয়ের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত, সেখানে চাপ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণ ও সমালোচনার মাধ্যমে চীন নিজেকে ‘বিকল্প বৈশ্বিক নেতা’ হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়।
এ.আই/এম.আর