by 
যশোর, ১৪ মে ২০২৫: যশোরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তালিকায় ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৪ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলার ‘সি’ ক্যাটাগরির ৬৬ জন জুলাই যোদ্ধার প্রত্যেককে এক লাখ টাকার চেক বিতরণের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রণয়নে অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেন। তারা শহরের আলোচিত ‘জাবির ট্র্যাজেডি’র নিহতদের শহীদ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে প্রশ্ন তুলে এবং আহত তালিকায় স্বজনপ্রীতি ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করেন। এ সময় ছাত্ররা পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন এবং জেলা প্রশাসন তালিকার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়। চেক বিতরণের সময় ছাত্ররা ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানায়।
যশোর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্যসচিব মারুফ হাসান সুকর্ণ বলেন, “তালিকায় নূর ইসলাম নামে একজনকে আহত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু সে কোথাও আহত হয়নি। এমন ১৫ থেকে ২০ জনকে তালিকায় রাখা হয়েছে, যারা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিল না। এটি জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে বেঈমানি।”
মূখ্য সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন লিখন বলেন, “যশোরে ৬৬ জনকে আহত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু অনেকেই আন্দোলনে আহত নন। তাদের জুলাই যোদ্ধা হিসেবে মানতে পারছি না। তালিকায় স্বজনপ্রীতি হয়েছে। ভুয়া যোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্তি চাই না। অবিলম্বে প্রকৃত যোদ্ধাদের চিহ্নিত করার দাবি জানাচ্ছি।”
আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, “আন্দোলনকারীদের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে আহত হয়েছেন। কিন্তু ‘সি’ ক্যাটাগরির তালিকায় অধিকাংশই আহত নন। আমরা নিজেদের নাম তালিকায় তুলিনি। তালিকা যাচাই করা উচিত।”
শহীদ ও আহত যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য মেজবাহুর রহমান রামীম বলেন, “শুধু যশোর নয়, রাজধানী ও অন্যান্য জেলার শহীদ ও আহতদের তালিকা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। আমরা তা যাচাই করেছি।”
জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, “তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তুত হয়েছে এবং জেলা কমিটি যাচাই করেছে। কমিটিতে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিলেন। তবুও অসঙ্গতি থাকতে পারে। ছাত্রদের নেতৃত্বে পুনরায় যাচাই করে সংশোধনের সুযোগ আছে।”
হট্টগোলের মধ্যেই চেক বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজিবুল আলম, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।
এ.আই/এম.আর
.jpg)
