Friday, May 23, 2025

ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে ১৮০ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করল বাংলাদেশ

ঢাকা, ২৩ মে ২০২৫ – বাংলাদেশ কলকাতাভিত্তিক গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই) নামের একটি ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানির সঙ্গে ২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ১৮০ কোটি রুপি) চুক্তি বাতিল করেছে। 

এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য একটি ৮০০ টন ওজনের টাগ বোট কেনার কথা ছিল। ২০২৩ সালে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে স্বাক্ষরিত ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা চুক্তির অংশ হিসেবে এই প্রকল্পটি ছিল প্রথম বড় উদ্যোগ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট প্রথম এই খবর প্রকাশ করে, এবং ইন্ডিয়া টুডেএনডিটিভি-সহ একাধিক শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম এটি কভার করেছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, জিআরএসই ভারতীয় পুঁজিবাজারকে জানিয়েছে যে বাংলাদেশ সরকার তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে জিআরএসই বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই চুক্তি বাতিলের পেছনে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক উত্তেজনাকে দায়ী করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাংলাদেশ এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর আগে ভারত হঠাৎ করে বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা স্থগিত করলে বাংলাদেশ স্থলপথে ভারত থেকে তুলা আমদানি সীমিত করে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ‘সেভেন সিস্টার্স’ অঞ্চলকে ‘স্থলবেষ্টিত’ বলে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের ‘সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক’ হিসেবে বর্ণনা করেন। এছাড়া তিনি চীনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারের প্রস্তাব দেন, যার জবাবে ভারত বাংলাদেশের পণ্যের ওপর স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
হিন্দু বিজনেস লাইন জানিয়েছে, চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকার ও জিআরএসইর মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে, যদিও এই আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। ২০১৫ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশকে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সুবিধা দিয়েছে, যার বেশিরভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে শেখ হাসিনার আমলে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা এই চুক্তি বাতিলকে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। এটি ভবিষ্যতে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, তা এখন পর্যবেক্ষণের বিষয়।
এ.আই/এম.আর

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.