Tuesday, May 27, 2025

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় জামায়াত নেতা আজহারকে খালাস দিল আপিল বিভাগ

ঢাকা, ২৭ মে ২০২৫ – বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজনকে খালাস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালত এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, জুবায়ের রহমান চৌধুরী, মো. রেজাউল হক, ইমদাদুল হক, মো. আসাদুজ্জামান এবং ফারাহ মাহবুব। সাত বিচারপতি সর্বসম্মতভাবে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
এই রায়ের ফলে আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ জনের গণহত্যা, ১৭ জনের অপহরণ, একজনের ধর্ষণ, ১৩ জনের আটক ও নির্যাতন এবং শত শত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। তবে জামায়াতে ইসলামী এই রায়কে “প্রহসন” হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে।
আজহারের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক এবং ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।
গত ৮ মে আপিলের শুনানি শেষ হওয়ার পর ২৭ মে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়। ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আজহারের আইনজীবীরা ১১৩টি যুক্তি উপস্থাপন করে ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার নথি দাখিল করেন।
আদালতে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানসহ অনেকে।
এই রায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এ.আই/এম.আর

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.