ঢাকা, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫: পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে সরকার দেশের ৫১টি পাথর কোয়ারির মধ্যে ১৭টির ইজারা প্রদান স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষিত কোয়ারিগুলোতে ইজারা প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া, সিলেট জেলার ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, রতনপুর, বিছানাকান্দি এবং লোভাছড়ার পাথর মহালের নৈসর্গিক সৌন্দর্য রক্ষায় ইজারা কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে গেজেটভুক্ত পাথর, সিলিকা বালি, নুড়ি পাথর এবং সাদা মাটির কোয়ারি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, অন্যান্য কোয়ারিতে ইজারা প্রদানের আগে পরিবেশ অধিদফতর থেকে পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক। অবৈধ পাথর উত্তোলনের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে শ্রমিকদের পরিবর্তে প্রকৃত দায়ী ও দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর বিক্রি না করে তা কাস্টমসের মাধ্যমে সরকারি নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হবে।
এ.আই/এম.আর
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “শুধু পাথর মহল নয়, অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন রোধেও একই নীতিমালা প্রয়োগ করা যেতে পারে। এতে পরিবেশ ও জনস্বার্থ রক্ষিত হবে এবং বালু ও পাথরের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ আইন মেনে জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে।”
উপদেষ্টা আরও জানান, পরিবেশ অধিদফতরের পূর্ববর্তী সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে এখন থেকে দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সকল পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন স্থগিত করেছিল। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি এই স্থগিতাদেশ বাতিল হলেও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে আজকের সভায় ১৭টি কোয়ারির ইজারা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ.আই/এম.আর