বিনোদন ডেস্ক, ঢাকা গেট
২৭ এপ্রিল ২০২৫
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বিখ্যাত গায়ক আদনান সামি সম্প্রতি প্রাক্তন পাকিস্তানি মন্ত্রী চৌধুরী ফাওয়াদ হুসেনের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন। পেহেলগাম হামলার পর ভারত সরকারের নির্দেশে সকল পাকিস্তানি নাগরিককে ২৬ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ছাড়তে বলা হয়। এরপর ফাওয়াদ হুসেন প্রশ্ন তুলে বলেন, আদনান সামি কি তাহলে ভারতেই থেকে যাবেন? এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক।
আদনান সামি প্রাক্তন মন্ত্রীর মন্তব্যের জবাবে তাকে ‘অশিক্ষিত বোকা’ বলে সম্বোধন করেন এবং জানান, তিনি ২০১৬ সালেই ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। মুম্বাইয়ে পরিবার নিয়ে বসবাসকারী এই গায়ক ভারতের প্রতি তার আনুগত্যের কথা বারবার উল্লেখ করেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, ২৭ এপ্রিলের মধ্যে সকল পাকিস্তানি নাগরিক দেশ ত্যাগ করবেন। তবে মেডিক্যাল ভিসাধারীদের জন্য সময়সীমা ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এই নির্দেশের পর ফাওয়াদ হুসেন তার এক্স হ্যান্ডেলে আদনান সামির ভারতে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুললে গায়ক তীব্র ভাষায় জবাব দেন। তিনি হুসেনের দাবি খণ্ডন করে বলেন, তিনি লাহোরের নন, বরং পেশোয়ারের বাসিন্দা। তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য হুসেনকে কটাক্ষ করেন সামি।
আদনানের পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বহুদিন ধরেই তিক্ত। ২০২২ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি পাকিস্তান সরকারের সমালোচনা করে ভারতের প্রতি তার ভালোবাসার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আমার সমস্যা। যারা আমাকে চেনে, তারা জানে তারা আমার সঙ্গে কী করেছে। এটাই পাকিস্তান ছাড়ার সবচেয়ে বড় কারণ।” তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, একদিন তিনি পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে তার অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আনবেন। তিনি বলেন, “অধিকাংশ মানুষ জানে না তারা আমার সঙ্গে কী করেছে। সাধারণ মানুষ শুনলে চমকে যাবে। বহু বছর নীরব ছিলাম, কিন্তু সঠিক সময়ে বলব।”
একটি পুরনো বিবিসি সাক্ষাৎকারে আদনান জানিয়েছিলেন, ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে তাকে ১৮ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে এবং দেড় বছর তিনি দেশছাড়া ছিলেন। তিনি এটাও উল্লেখ করেন, পাকিস্তানে তার জীবনের ঝুঁকি ছিল, যার কারণে তিনি ভারতে চলে আসেন।
এই বিতর্ক আদনান সামির ভারতীয় নাগরিক হিসেবে অবস্থান এবং পাকিস্তানের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ককে আরও একবার সামনে এনেছে।
এ.আই/এম.আর