সুস্থ জীবনযাপনের জন্য পরিবেশ রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তবে পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণে বাংলাদেশ হিসেবে জাতি হিসেবে কোনো উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। পরিবেশ সুরক্ষা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৯তম। বায়ুদূষণের দিক থেকেও বিশ্বের ১২০০ শহরের মধ্যে ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে উন্নয়নের নামে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
তিনি বলেন, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া মাতারবাড়ি, বড়পুকুরিয়া ও পায়রার মতো কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশের ক্ষতি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন টেকসই নয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর ) তেজগাঁওয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামী সরকার জলবায়ু তহবিলের অর্থ অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সড়কে বাতি স্থাপন, বাস টার্মিনাল নির্মাণ, রাস্তাঘাট মেরামত, কলেজ ভবন তৈরি, পুকুরের ঘাট নির্মাণ, পার্ক তৈরি, জলবদ্ধতা নিরসন ও অবকাঠামো নির্মাণ। এসব কাজের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার সঙ্গে তেমন কোনো সম্পর্ক ছিল না।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, পরিবেশ রক্ষার শিক্ষা পরিবার থেকেই শুরু হওয়া উচিত। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি শৈশব থেকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। দূষণের কারণে আমরা ক্রমশ জর্জরিত হচ্ছি। গত ৫৪ বছরে আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেছে, যা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। একদিকে আমরা জলবায়ুর ঝুঁকিতে রয়েছি, অন্যদিকে জলবায়ু ঋণের বোঝা বহন করছি। তরুণরা ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০ এবং ২০২৪ সালে গণতন্ত্রের জন্য যেভাবে ভূমিকা রেখেছে, তেমনি পরিবেশ রক্ষায়ও ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পরিচালক ড. এস এম মোর্শেদ। সংলাপে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি, প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি, ইডেন মহিলা কলেজ এবং তেজগাঁও কলেজের বিতার্কিকরা অংশ নেন।