Wednesday, August 27, 2025

ধর্ষণ ও হত্যার প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড, সহযোগীর কারাদণ্ড

বরগুনায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রধান আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তার দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হৃদয় খান (২০), বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার পূঁজাখোলা ইসলামপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম খানের ছেলে। তার সহযোগী আসামি জাহিদুল ইসলামকে (১৯) পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রনজুয়ারা সিপু। জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের বাবা আমতলী থানায় দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ১২ বছরের মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে পাশের বাড়ির খেতে শাক তুলতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। দুপুর পর্যন্ত না ফেরায় তার বাবা-মা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন এবং পরের দিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ভিকটিমের ভাই ইমরান তার বাবাকে জানায়, অজ্ঞাতনামা একজন তার ফোনে মেসেজ করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বাদী পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান আসামি হৃদয় খানকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় জানায়, মুক্তিপণের জন্য মেয়েটিকে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ না পেয়ে আমতলীর নূর মোহাম্মাদ খানের বাড়ির সামনে হোগলাপাতার মধ্যে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের কথা ফাঁস হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় হৃদয় তার হিজাব দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে। ৮ ফেব্রুয়ারি আমতলীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের কাছে হৃদয় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে। ভিকটিমের বাবা বলেন, “আসামি হৃদয় আমার নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে। না পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করে লাশ হোগলাপাতার মধ্যে লুকিয়ে রাখে। আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি।” আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওয়াসি মতিন বলেন, মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের কোনো আলামত নেই। এ রায়ের বিরুদ্ধে তার মক্কেল উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু বলেন, “১২ বছরের একটি মেয়েকে অপহরণ, ধর্ষণ ও লাশ গোপন করা একটি জঘন্য অপরাধ। এ রায়ের খবর সবার কাছে পৌঁছলে অপরাধ কমবে।”

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.