আগামী ২২ আগস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে গোলাপবাগ মাঠে শুরু হচ্ছে "গোলাপবাগ মাঠ রক্ষা আন্দোলন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সিজন-৩"।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানউদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর:আলহাজ্ব বাদল সর্দার
মোসলে উদ্দিন আহমেদ: আহ্বায়ক, ৪৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি সাইফুল ইসলাম বাদল: সদস্য সচিব, ৪৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি জন দাস: প্রিন্সিপাল, জন ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল সম্মাননা প্রদানআন্দোলনে অবদান রাখা ৩৬ জন সহযোদ্ধাকে সম্মাননা হিসেবে অফিসিয়াল জার্সি প্রদান করা হবে। এছাড়া, আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাসনাত জুবায়ের এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এস এম মাইনুল হাসান’র নেতৃত্বে এই টুর্নামেন্টের আয়োজন আরও গৌরবময় হয়ে উঠবে।
এতে অংশ নেবে ১২টি দল এবং ১৫৬ জন খেলোয়াড়। প্রতি দলে ১৬ জন খেলোয়াড় থাকবেন, যার মধ্যে ৪ জন রিজার্ভ। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:নিলাম ও দল গঠন: ৮ আগস্ট ২০২৫-এ নিলামের মাধ্যমে দল গঠন করা হবে। এরপর জার্সি উন্মোচন অনুষ্ঠিত হবে।
খেলার সময়: প্রতি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে খেলা শুরু হবে। ফরম্যাট: ১২টি দল দুটি গ্রুপে বিভক্ত হবে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ৪টি দল সেমিফাইনালে উঠবে। স্কোরিং: ক্রিক হিরোস অ্যাপের মাধ্যমে স্কোর রেকর্ড করা হবে। অংশগ্রহণকারী দলগুলো:দ্যা ব্রাদারহুড
ক্র্যাক প্লাটুন ২.০
জেড ফোর্স
ফিয়ার্লেস ফাইটার
ড্রিম মেকার
চ্যাম্পিয়ন চ্যালেঞ্জার
ক্রিয়েশন চ্যালেঞ্জার্স
বাংলা ওয়ারিয়র্স
ক্রেজি ক্রিকেটারস
গ্ল্যাডিয়েটর্স
স্পার্টাকাস
লিজেন্ড বয়েজ
এই টুর্নামেন্ট শুধু একটি ক্রীড়া আয়োজন নয়, বরং একটি দশকব্যাপী নাগরিক সংগ্রামের ফসল, যা এই মাঠকে অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করে জনগণের কাছে ফিরিয়ে এনেছে। মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণের পর ঠিকাদারদের দখলে চলে যাওয়া এই মাঠ আজ যাত্রাবাড়ীর মানুষের গর্ব ও আনন্দের প্রতীক।
আন্দোলনের নেতৃত্বএই আন্দোলনের সাফল্যের পেছনে মাঠ রক্ষা আন্দোলন কমিটি’র নেতৃবৃন্দের অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে। কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা হলেন:
সভাপতি: হাসনাত জুবায়ের সাধারণ সম্পাদক: এস এম মাইনুল হাসান কার্যকরী সভাপতি: নূরে আলম ফাহাদ সাংগঠনিক সম্পাদক: সোহেল ভুঁইয়া গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক: কামরুজ্জামান স্বাধীন দপ্তর সম্পাদক: মো রাজীব আরিফ ক্রিয়া বিষয়ক সম্পাদক: সাবের হোসেন রাজু অর্থ বিষয়ক সম্পাদক: মো স্বপন সিনিয়র সহ-সভাপতি: সাজ্জাদ হোসেন বাবু তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই মাঠটিকে ফিরিয়ে এনেছে।
গোলাপবাগ মাঠ রক্ষা আন্দোলন, একটি দীর্ঘমেয়াদী নাগরিক প্রয়াস, গোলাপবাগ মাঠকে অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করার জন্য স্থানীয় জনগণ ও পরিবেশকর্মীদের সমন্বিত চেষ্টার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। এই মাঠটি একসময় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে বেদখল হয়ে পড়েছিল। তবে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই আন্দোলনের ফলে ২০১৬ সালের ৩১শে অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মাঠটিকে দখলমুক্ত করতে বাধ্য হয়। আন্দোলনের প্রেক্ষাপট মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণকালে গোলাপবাগ মাঠে নির্মাণ সামগ্রী জমা করা হয়, যার ফলে মাঠটি খেলাধুলা ও মানুষের হাঁটাচলার জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এই বেদখলের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ ও পরিবেশকর্মীরা আন্দোলন শুরু করেন। সময়ের সাথে সাথে এই আন্দোলনে সমাবেশ, মানববন্ধন ও লংমার্চের মতো কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হাসনাত জুবায়ের এই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), গ্রিন ভয়েস ও গোলাপবাগ মাঠ রক্ষা আন্দোলনের মতো সংগঠনগুলো এতে সক্রিয় অংশ নেয়। আন্দোলনের ফলাফল দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০১৬ সালের ৩১শে অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গোলাপবাগ মাঠকে দখলমুক্ত করে। এই বিজয় শুধুমাত্র গোলাপবাগ মাঠ রক্ষা করেনি, বরং ঢাকার অন্যান্য মাঠ ও পার্ক রক্ষায় একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি প্রমাণ করে যে, নাগরিক সচেতনতা ও সমন্বিত প্রচেষ্টা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সক্ষম। গোলাপবাগ মাঠ রক্ষা আন্দোলন পরিবেশ রক্ষা ছাড়াও জনগণের অধিকার ও সুস্থ জীবনের জন্য উন্মুক্ত স্থানের গুরুত্বকে জোর দেয়।
“আমাদের এলাকার কেউ নেই যার গোলাপবাগ মাঠের সাথে কোনো স্মৃতি নেই। এটা আমাদের আবেগ, আমাদের অনুভূতি—ইট-পাথরের জঙ্গলে এক টুকরো স্বর্গ। স্বর্গ সেখানেই যেখানে আনন্দ, আর এই মাঠে সবার চোখে আনন্দ দেখা যায়।” তিনি আরও জানান, এই টুর্নামেন্ট মাঠের অস্তিত্ব ও সম্প্রদায়ের সাথে এর গভীর সম্পর্কের প্রকাশ। “এই টুর্নামেন্ট আমাদের মাঠের জানান দেয়, আমাদের বন্ধনের গভীরতা দেখায়। এটি আমাদের আন্দোলনের সবচেয়ে বড় উদযাপন,” তিনি বলেন। মাঠটি শুধু খেলার জায়গা নয়, সমাজের জন্য একটি সমাধানও বটে। প্রতিনিধি জানান, “মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে এই মাঠ একটি বড় সমাধান। তরুণরা এখানে এসে খারাপ সঙ্গ থেকে দূরে থাকে, শারীরিকভাবে সক্ষম হয় এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গড়ে তোলে।” ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন,