নথি পোড়ানোর জন্য পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানো হয়, যদিও হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না। এ কাজের জন্য ১০-১২ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। পিবিআই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বিয়ামের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম (৩৮) এবং তার ভাড়াটে সহযোগী মো. আশরাফুল ইসলাম (৩৬)। তাদের ২৫ জুলাই কুড়িগ্রাম ও ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৮ জুলাই, সোমবার দুপুরে রাজধানীর কল্যাণপুরে পিবিআইয়ের উত্তর (এসআইঅ্যান্ডও) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টা ২০ মিনিটে বিয়ামের ৫০৪ নম্বর কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে সমিতির নথিপত্র, ব্যাংক হিসাব, চেক বই, জমি ক্রয়ের চুক্তিপত্র, আসবাবপত্র, এসি ইত্যাদি পুড়ে যায়। ঘটনাস্থলে অফিস সহায়ক আব্দুল মালেক মারা যান, এবং গাড়িচালক মো. ফারুক জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক (অবসরপ্রাপ্ত) মো. মশিউর রহমান অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। হাতিরঝিল থানা পুলিশ দুই মাস তদন্তের পর ৬ মে পিবিআই মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে, এবং এসআই মোহাম্মদ গোলাম মওলাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।
পিবিআইয়ের টিম সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখে, ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে মুখোশধারী এক সন্দেহভাজন যুবক বিয়াম ভবনে প্রবেশ করে সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেয়। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আশরাফুল ইসলামকে শনাক্ত করা হয়, যিনি তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং জাহিদুল ইসলামকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে চিহ্নিত করেন। জাহিদুলকে ঢাকার বসুন্ধরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আশরাফুল জানান, জাহিদুল তার পূর্ব পরিচিত ছিলেন। তিনি তাকে ঢাকায় এনে হোটেলে রাখেন এবং নথি ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন আশরাফুল ক্যামেরা বন্ধ করেন, এবং মালেক ও ফারুক পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগান, যা বিস্ফোরণের কারণ হয়। ২৬ জুলাই আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তি দেন।
আব্দুর রহমান বলেন, এআই এবং গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।