Sunday, July 27, 2025

বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে বাড়ছে ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা

ভারতীয় শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার গন্তব্য নির্বাচনে ২০২৪ সালে বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিগত এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডা ছিল ভারতীয় শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, এসব দেশের প্রতি আগ্রহ কমছে এবং বিকল্প গন্তব্য হিসেবে উঠে আসছে বাংলাদেশ, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর ও উজবেকিস্তানের মতো দেশগুলো।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ তথ্যে জানা গেছে, ২০২৩ সালে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে যাওয়া ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৯২ হাজার। অথচ ২০২৪ সালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৯ হাজারে—এক ধাক্কায় ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী কমেছে।

তবে এই হ্রাসের মধ্যে এক আশ্চর্য প্রবণতা চোখে পড়ছে। যেসব দেশ আগে ভারতের শিক্ষার্থীদের প্রথম সারির পছন্দ ছিল না, সে দেশগুলোতেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে যেখানে বাংলাদেশে পড়তে আসে ২০ হাজার ৩৬৮ ভারতীয় শিক্ষার্থী, ২০২৪ সালে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ২৩২ জনে, অর্থাৎ প্রায় ৪৪ শতাংশ বেশি।)

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তনের পেছনে একাধিক কারণ কাজ করছে। পশ্চিমা দেশগুলোর ভিসা প্রক্রিয়া আগের চেয়ে কঠিন হয়েছে। একই সঙ্গে অভিবাসন নীতির কড়াকড়ি, টিউশন ফি বৃদ্ধি এবং ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের অনেকটা বাধ্য করছে বিকল্প পথ খুঁজে নিতে। বাংলাদেশ, রাশিয়া, ও উজবেকিস্তানের মতো দেশগুলো সেই বিকল্প হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করছে। এসব দেশে মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ টেকনিক্যাল শিক্ষায় তুলনামূলক কম খরচ, সহজ ভিসা প্রক্রিয়া এবং সুরক্ষিত পরিবেশ ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলো থেকে আগত শিক্ষার্থীরা ভাষা, সংস্কৃতি ও আবাসনের দিক থেকেও সহজ অভিযোজনের সুযোগ পাচ্ছেন।
শিক্ষাবিদ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তন ভারতীয় আন্তর্জাতিক শিক্ষাবাজারে একটি রূপান্তরের সূচনা করছে। যেখানে ঐতিহ্যবাহী ‘পশ্চিমমুখী’ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষার্থীরা নতুন, কম ব্যয়বহুল এবং সম্ভাবনাময় গন্তব্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.