গভীর রাতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণার জেরে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের লাঠিচার্জ করেন। ঘটনাটি ঘটে গতকাল বিকেল পৌনে চারটার দিকে।
শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগসহ কয়েকটি দাবিতে সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত বৃহস্পতিবার পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো চারজন হলেন আশিকুর রহমান তানভীর (১৯), জেফরী অভিষেক সিকদার (১৯), আবু সুফিয়ান (২১) ও শাকিল মিয়া (১৯)।
আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শাহবাগ থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার চারজনকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জামিন আবেদনে বলা হয়, আবু সুফিয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, আশিকুর মাইলস্টোন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন, এবং জেফরী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁরা হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত নন। তবে শাকিল কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কিনা, তা উল্লেখ করা হয়নি।
গত মঙ্গলবার শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনার পর বুধবার রাতে পুলিশ মামলা দায়ের করে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১,০০০ থেকে ১,২০০ জনকে আসামি করা হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় পুলিশের কর্তব্যে বাধা, সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা, সচিবালয়ে ভাঙচুর ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত সোমবার রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীসহ ২৯ জন নিহত এবং দেড় শতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন শিক্ষার্থীরা ঘুমিয়ে ছিলেন। সকালে এই ঘোষণা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, যা তাঁদের ক্ষুব্ধ করে।
মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে স্লোগান দেওয়ার পর একপর্যায়ে তাঁরা সচিবালয়ের মূল ফটক খুলে ভেতরে ঢুকে পড়েন এবং অন্তত ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পুলিশ ও সেনাসদস্যরা তাঁদের ধাওয়া করে বাইরে বের করে দেন। এ সময় লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে সচিবালয়ের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন।
পরে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের পাশে জিপিও মোড় ও হাইকোর্ট মোড়ে অবস্থান নেন। পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও ধাওয়া করে। পাল্টা শিক্ষার্থীরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষে অন্তত ৭৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন, যাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যও আহত হন।
Note For Readers:
The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules.
Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters.
The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.