সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, বাংলাদেশ – সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় মিয়ানমার থেকে আসা ২০ জন রোহিঙ্গা নাগরিক একটি ট্রলারসহ সেন্ট মার্টিন দ্বীপের তীরে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, বেলা ১১টার দিকে ট্রলারটি দ্বীপের উত্তর সৈকতে ভিড়ে।
ট্রলারে থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ, ৩ জন নারী এবং ১ জন শিশু রয়েছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন একটি পরিবারের সদস্য। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন জানিয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে এলে তাঁদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন প্রথম আলোকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।”
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, “দুপুরের দিকে রোহিঙ্গাবাহী ট্রলারটি দ্বীপের উত্তর সৈকতে ভিড়ে। পাঁচজন একটি পরিবারের সদস্য। বাকি ১৫ জনের মধ্যে ৭ জন মাঝিমাল্লা। সাগর উত্তাল হওয়ায় তাঁরা জীবন বাঁচাতে তীরে আশ্রয় নিয়েছেন।”
ফয়েজুল ইসলাম জানান, রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, মিয়ানমারে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে তাঁরা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আগে কারাগারে বন্দী ছিলেন। মুক্তির পর তাঁরা দেশ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সাগরে ঝড়ের মুখে পড়ে ট্রলারটি সেন্ট মার্টিনের উপকূলে চলে আসে।
স্থানীয়রা ট্রলারটি দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেন। পরে বিজিবির একটি দল তাঁদের উদ্ধার করে একটি হোটেলের কক্ষে আশ্রয় দেয়। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাঁদের খাবার দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন।
সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ১১ মাসের যুদ্ধের পর ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর মংডুসহ রাখাইনের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এর ফলে গত ১৮ মাসে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
সেন্ট মার্টিনে বিজিবি ও কোস্টগার্ড স্টেশনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি।