পটুয়াখালী, ১৩ জুন ২০২৫ – পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে পাতাবুনিয়া বটতলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রচেষ্টায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বকুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়ায় প্রয়াত দলীয় কর্মী বাদল মেম্বারের স্মরণসভা শেষে ফেরার পথে নুরুল হক নুরের ওপর হামলা হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসান মামুনের অনুসারীরা তার পথরোধ করে, হামলা চালায় এবং ৮-১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর ভোররাত ৪টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাকে উদ্ধার করে উপজেলা ডাকবাংলোয় নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে নুর অভিযোগ করেন, হাসান মামুনের অনুসারীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “স্মরণসভা শেষে ফেরার পথে হাসান মামুনের লোকজন গাছ ফেলে, রড ও রামদা নিয়ে হামলা চালায়। স্থানীয়দের মারধর করা হয় এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়।” তিনি প্রশাসনের দুর্বলতার সমালোচনা করে বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসেও ‘সন্ত্রাসীদের’ হটাতে পারেনি।
অপরদিকে, হাসান মামুন জানান, তিনি ঘটনার সময় ঢাকায় ছিলেন। তিনি বলেন, “নুরুল হক নুর সম্প্রতি ঠিকাদারি কাজ নিয়ে বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন। এছাড়া তার লোকজন চরবিশ্বাস বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “নুরের অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে আমি সেনাবাহিনী ও পুলিশকে উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করেছি। আমি গলাচিপায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।”
গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম ফাহিম ঢাকা পোস্টকে জানান, পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর নুরকে উপজেলা ডাকবাংলোয় আশ্রয় দেওয়া হয়। পরে প্রশাসন তাকে গলাচিপা ছেড়ে জেলা শহরে যেতে পরামর্শ দেয়। তিনি বলেন, “বিএনপির সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক ছিল, কিন্তু হাসান মামুন এই সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছেন। আমরা এ ঘটনায় দুপুরের পর সংবাদ সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
গলাচিপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সৈয়দুজ্জামান ও গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশাদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ.আই/এম.আর