০৬ জুন ২০২৫ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব এখন তিক্ততায় রূপ নিয়েছে। এই দ্বন্দ্বের জেরে টেসলার শেয়ারে ঘটেছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দরপতন। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমালোচনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে টেসলার শেয়ার ১৪ শতাংশ পড়ে যায়, যার ফলে কোম্পানিটির বাজারমূল্য একদিনেই ১৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি কমে যায়। এটি টেসলার ইতিহাসে একদিনে সবচেয়ে বড় ক্ষতি এবং শেয়ারবাজারে যেকোনো কোম্পানির জন্যও রেকর্ড।
ট্রাম্পের মন্তব্যের পর টেসলার শেয়ারে রেকর্ড ধস: মাস্ক-ট্রাম্প সম্পর্কে ফাটল
২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারণায় মাস্ক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিলেন, যা ট্রাম্পকে নির্বাচনে জয়ী হতে সহায়তা করে। এই সমর্থনের জেরে টেসলার শেয়ারও তখন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত করছাড় ও ব্যয় বিল নিয়ে মতবিরোধের কারণে দুজনের সম্পর্কে ফাটল ধরে। মাস্ক এই বিলকে “জঘন্য” আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণকে ৩৬.২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে দেবে।
বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে ট্রাম্প মাস্কের সমালোচনা করে বলেন, “ইলন এবং আমার মধ্যে দারুণ সম্পর্ক ছিল। আমি জানি না এটি আর থাকবে কি না।” তিনি মাস্কের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সরকারি চুক্তি বাতিলেরও হুমকি দেন। পাল্টা জবাবে মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেন, “আমি না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে হেরে যেতেন।” তিনি এমনকি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানান।
এই বাকযুদ্ধের প্রভাব শেয়ারবাজারে স্পষ্ট। ট্রাম্পের মন্তব্যের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে টেসলার শেয়ারে এই ধস নামে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই দ্বন্দ্ব কেবল ব্যক্তিগত নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে।
মাস্কের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ, যেমন ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারোকে “নির্বোধ” বলা এবং ট্রাম্পের নাম জেফরি এপস্টাইন ফাইলের সঙ্গে জড়ানোর অভিযোগ, দুজনের সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করেছে। এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মঞ্চে নতুন নাটকের জন্ম দিয়েছে
এ.আই/এম.আর