ঢাকা, ১৭ জুন ২০২৫: জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। দলের দশম কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি বড় অংশ তাঁকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর জন্য তৎপরতা শুরু করেছে। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে এই গ্রুপ ২৮ জুন কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দলীয় সূত্র জানায়, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তারা দলীয় গঠনতন্ত্রের বিতর্কিত ২০(ক) ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছেন, যা চেয়ারম্যানকে যেকোনো পদে নিয়োগ, অপসারণ বা স্থলাভিষিক্ত করার অসীম ক্ষমতা দেয়। এই ধারাকে তারা অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী বলে সমালোচনা করছেন।
জি এম কাদের ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা দাবি করছেন, এই তৎপরতা ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফল। তাঁদের মতে, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে লক্ষ্য করে কিছু নেতাকে প্রলোভন দেখিয়ে দলে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। জি এম কাদের বলেন, “এঁদের কারণে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর বলে অপবাদ দেওয়া হয়। তারা সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। তবে তারা কোথাও টিকবে না।”
২০ মে প্রেসিডিয়াম সভায় ২৮ জুন বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হলেও, হল বরাদ্দ বাতিল হওয়ায় জি এম কাদের ১৬ জুন সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেন। তবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদার এই সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক বলে কাকরাইলে সম্মেলন করার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। তাদের সমর্থন করছেন রওশন এরশাদপন্থী নেতারা, যারা পূর্বে জি এম কাদেরের হাতে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন, যেমন কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন, আবদুস সাত্তার ও কাজী মামুনুর রশীদ।
দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুও গঠনতন্ত্র সংশোধনের পক্ষে। তিনি বলেন, “২০ ধারা স্বৈরাচারী। এর কারণে আমি নিরাপত্তাহীন।” এই পরিস্থিতি জি এম কাদেরের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। তিনি ও তাঁর স্ত্রী শেরিফা কাদের ইতোমধ্যে হত্যা মামলা, ব্যাংক হিসাব জব্দ ও দুদকের তদন্তের মতো চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন। এই অভ্যন্তরীণ সংকট তাঁর নেতৃত্বের জন্য নতুন হুমকি।
এ.আই/এম.আর