আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ০৯ জুন ২০২৫ : গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে তেল রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল মুসলিম দেশ আজারবাইজান। তবে ইসরায়েলের প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে, এই ঘোষণা ছিল কেবল লোক দেখানো এবং প্রতারণামূলক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কের চাপের মুখে ২০২৩ সালের শেষ দিকে আজারবাইজান ইসরায়েলে তেল রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয় এবং তাদের কাস্টমস ডাটাবেজ থেকে ইসরায়েলে তেল রপ্তানির তথ্য মুছে ফেলে। কিন্তু বাস্তবে তেল সরবরাহ কখনো বন্ধ হয়নি। আজারবাইজান এখন ‘তৃতীয় দেশের’ পরিচয় ব্যবহার করে তুরস্কের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পাইপলাইনের মাধ্যমে ইসরায়েলে তেল পাঠাচ্ছে, যদিও কাগজে-কলমে তেলের গন্তব্য অন্য কোথাও দেখানো হচ্ছে।
একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা হারেৎজকে জানিয়েছেন, “আমরা আজারবাইজানের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছি যে, জ্বালানি ও কৌশলগত সম্পর্ক পূর্বের মতোই অব্যাহত থাকবে।” ২০২৩ সালে ইসরায়েলের আমদানি করা মোট তেলের ৩০ শতাংশই আজারবাইজান থেকে এসেছিল, এবং এই নির্ভরতা এখনো গোপনে বজায় রয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ২০২৩ সালে গাজায় ইসরায়েলি হামলা এবং ত্রাণবাহী তুর্কি উড়োজাহাজকে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে তুরস্কের বিরোধী দলগুলোর দাবি, আজারবাইজানের তেল এখনো তুরস্কের ভেতর দিয়ে ইসরায়েলে যাচ্ছে, যা এরদোয়ানের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
ইস্তাম্বুলে আজারবাইজানের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি এসওসিএআর-এর অফিসের সামনে বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, “মুসলিম পরিচয় নিয়ে দখলদারদের সঙ্গে ব্যবসা করা শুধু ভণ্ডামি নয়, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”
ইসরায়েল সরকার দাবি করেছে, আজারবাইজান তেল সরবরাহ বন্ধ করলেও তারা বিকল্প উৎস খুঁজে নেবে। তবে হারেৎজের প্রতিবেদন প্রমাণ করে যে, আজারবাইজানের তেল সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।
এ.আই/এম.আর