ঢাকা, ৫ জুন ২০২৫ – গত কোরবানির ঈদে ১৫ লাখ টাকা দাম হাঁকানো একটি ছাগল নিয়ে সৃষ্ট তুমুল বিতর্কের পর সেই ছাগলটির খোঁজ পাওয়া গেছে। ‘ছাগলকাণ্ড’ নামে পরিচিত এই ঘটনা সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতকে জড়িয়ে দুর্নীতির অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছিল। এই ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিতর্কের শুরু হয়েছিল সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মোহাম্মদ ইমরান হোসাইনের একটি ভিডিওর মাধ্যমে। তিনি ব্রিটল জাতের এই ছাগলটির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করেন, যার উচ্চতা ৬২ ইঞ্চি এবং ঈদের সময় ওজন ছিল প্রায় ১৭৫ কেজি। মুশফিকুর ১৫ লাখ টাকায় ছাগলটি কেনেন এবং একটি সেলফি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। এরপরই প্রশ্ন ওঠে, একজন সরকারি কর্মকর্তার ছেলে কীভাবে এত টাকায় ছাগল কিনতে পারেন। মতিউর দাবি করেন, মুশফিকুর তার ছেলে নন। তবে অনুসন্ধানে তার দ্বিতীয় বিয়ের তথ্য এবং আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
ছাগলটি সাদিক অ্যাগ্রোর মোহাম্মদপুরের খামারে রয়ে যায়, যেটি ২০২৪ সালের জুনে সরকারি জমিতে গড়ে তোলার কারণে ভেঙে ফেলা হয়। খামারের পশুগুলো সাভারের আরেকটি খামারে সরানো হয়, যেখানে এই ছাগলটিও পাওয়া গেছে। খামার কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাগলটি এখনও বিক্রি হয়নি এবং এর ওজন কিছুটা কমেছে। তারা এটি দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরও উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মতিউর, তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, ছেলে তৌফিকুর রহমান এবং মেয়ে ফারজানা রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করে। একই দিন মতিউর ও লায়লা গ্রেপ্তার হন। এদিকে, সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসাইন বর্তমানে জেলে রয়েছেন।
এই ছাগলটি এখনও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি প্রতীক হিসেবে রয়ে গেছে।
এ.আই/এম.আর