Wednesday, June 4, 2025

খোলাবাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে নতুন নোট

ঢাকা, ৪ জুন ২০২৫ – ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০, ৫০ এবং ১০০০ টাকার নতুন ডিজাইন ও সিরিজের নোট বাজারে ছেড়েছে। কিন্তু তফসিলি ব্যাংকগুলোতে এই নোটগুলো পাওয়া যাচ্ছে না, ফলে মানুষ খোলাবাজার থেকে প্রায় দ্বিগুণ দামে এগুলো কিনতে বাধ্য হচ্ছে, বলছে ইউএনবি’র প্রতিবেদন।

মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে রাস্তার ব্যবসায়ীরা নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। খোলাবাজারে ২০ টাকার নোট ৫০ টাকায়, ৫০ টাকার নোট ৮০ টাকায় এবং ১০০০ টাকার নোট অতিরিক্ত ৫০–৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বান্ডিল হিসেবে ২০ টাকার নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, যেখানে প্রতি বান্ডিলে অতিরিক্ত ১,২০০ থেকে ১,৫০০ টাকা এবং ৫০ টাকার বান্ডিলে অতিরিক্ত ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকা দিতে হচ্ছে।
২ জুন থেকে সীমিত পরিসরে এই নোটগুলো বাজারে ছাড়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে ঢাকার ব্যাংকগুলোতে সরবরাহ করা হলেও ঈদের ছুটির পর জেলা শহরগুলোতে এগুলো পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ব্যাংকে নতুন নোট না পাওয়ায় গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ঈদের সালামির জন্য অনেকে খোলাবাজার থেকে চড়া দামে নোট কিনছেন।
মতিঝিল ও গুলিস্তানে ব্যবসায়ীরা খোলা আকাশের নিচে নতুন নোট বিক্রি করছেন। দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এই নোটগুলোর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও আকাশচুম্বী হয়েছে। গ্রাহক মনিরুল ইসলাম বলেন, “বাইরে নতুন নোট বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু ব্যাংক বলছে নোট নেই। বাজারে পর্যাপ্ত নোট না থাকলে খোলাবাজারে এত নোট এল কীভাবে?”
গুলিস্তানের গ্রাহক হাবিবুর রহমান বলেন, “সবকিছুতেই সিন্ডিকেট। টাকার নোট নিয়ে এমন সিন্ডিকেট শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব। ব্যাংকে নোট না পেয়ে দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মতিঝিলের এক ব্যবসায়ী বলেন, “নতুন নোট ব্যাংক থেকেই আসে। মতিঝিল ও গুলিস্তানের সরকারি ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আছে। তারাই নোট সরবরাহ করেন।” তিনি জানান, ২০ টাকার একটি বান্ডিল ৯০০ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে কিনে ৫০০–৬০০ টাকা লাভে বিক্রি করছেন। গুলিস্তানের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তারা মধ্যবর্তী চক্রের কাছে নোট বিক্রি করেন, যারা চড়া দামে বিক্রি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে খোলাবাজারে নোট যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে গ্রাহকরা টাকা তুলে বিক্রি করলে আমাদের কিছু করার নেই।” ব্যাংক কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগে তিনি বলেন, “কেউ জড়িত থাকলে তথ্য দিন, গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি নিজেও নতুন নোট পাইনি, অথচ ব্যাংকের সামনে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এটা দুঃখজনক।” গ্রাহকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বাড়তি দামে নোট কিনবেন না। না কিনলে সিন্ডিকেট ভেঙে পড়বে।”

এ.আই/এম.আর

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.