আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ২৮ মে ২০২৫ : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিশ্বের সব মার্কিন দূতাবাসে শিক্ষার্থী ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে। এর পাশাপাশি, স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর নজরদারির পরিকল্পনা করছে প্রশাসন। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই পদক্ষেপের ফলে দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোর ওপর উল্লেখযোগ্য চাপ পড়বে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক গোপন বার্তায় বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো স্টুডেন্ট ভিসার সাক্ষাৎকারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হবে না। তবে, পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্টধারীরা যথাসময়ে সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন। এই নির্দেশনার মাধ্যমে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্য যাচাই-বাছাই আরও কঠোর করা হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, “আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পরীক্ষা করি কে আমাদের দেশে প্রবেশ করছে, এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।”
এই সিদ্ধান্তের পেছনে ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু অভিজাত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দ্বন্দ্বকে দায়ী করা হচ্ছে। ট্রাম্পের অভিযোগ, এসব বিশ্ববিদ্যালয় ‘বামপন্থী চিন্তাধারা’ প্রচার করছে, ইহুদিবিরোধী কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দিচ্ছে এবং বৈষম্যমূলক ভর্তি নীতি অনুসরণ করছে। ইতোমধ্যে প্রশাসন বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল স্থগিত করেছে, শত শত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এবং হাজার হাজার ভিসা বাতিল করেছে। যদিও এর বেশিরভাগ পদক্ষেপ আদালতের নির্দেশে স্থগিত হয়েছে।
বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই নীতির মূল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি ও বিদেশি গবেষকদের স্বাগত জানানোর ক্ষমতা প্রত্যাহারের চেষ্টা করেছিল, যা একজন ফেডারেল বিচারক স্থগিত করেছেন। হার্ভার্ডে প্রতি চারজন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন বিদেশি, তাই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বিশ্ববিদ্যালয়টি বড় ধরনের আর্থিক ও শিক্ষাগত সংকটে পড়তে পারত।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দাবি, এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতা ও শিক্ষার অধিকারের ওপর আঘাত হানছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
এ.আই/এম.আর