Tuesday, May 27, 2025

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ কুষ্টিয়ায় গ্রেফতার

কুষ্টিয়া, ২৭ মে ২০২৫ : দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদকে কুষ্টিয়ায় গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (২৭ মে ২০২৫) কুষ্টিয়া শহরের কালীশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা রোডে একটি ভাড়া বাড়িতে তিন ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয়দের মতে, ভোরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে ফেলে এবং অভিযান পরিচালনা করে দুজনকে আটক করে সামরিক গাড়িতে নিয়ে যায়। সেনাবাহিনীর এক সদস্য জানান, সকাল ৮টার দিকে একটি কালো মাইক্রোবাসে এসে সেনাবাহিনী একজন দাড়িওয়ালা ব্যক্তি ও অপর এক যুবককে হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিকেল ৫টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে গ্রেফতারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।

সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। সুব্রত বাইনের নামে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ এখনও বহাল রয়েছে, এবং তার গ্রেফতারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখন পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। মোল্লা মাসুদ ছিলেন সুব্রত বাইনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং মোগবাজারভিত্তিক ‘সেভেন স্টার গ্রুপ’ নামে কুখ্যাত সন্ত্রাসী সংগঠনের দ্বিতীয় কমান্ডার। ১৯৯৭ সালে সুব্রত বাইন, তানভিরুল ইসলাম জয়, টোকাই সাগর, টিক্কা, সেলিম, চঞ্চল ও মোল্লা মাসুদ মিলে এই গ্রুপ গঠন করেন, যারা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি এবং হত্যার মতো অপরাধে জড়িত ছিল।
১৯৯০-এর দশকে সুব্রত বাইন মোগবাজারের বিশাল সেন্টারে চাঁদাবাজি ও দরপত্র নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কুখ্যাতি অর্জন করেন, যার ফলে তাকে ‘বিশাল সেন্টারের সুব্রত’ নামে ডাকা হতো। ২০০৪ সালে তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং সেখানে ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি বাংলাদেশে চাঁদাবাজির টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাতেন। ২০০৮ সালে তিনি কলকাতায় গ্রেফতার হন, তবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা যায়নি। মোল্লা মাসুদও ২০০৪ সাল থেকে ভারতে পালিয়ে ছিলেন এবং ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার হন, কিন্তু তাকেও বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সুব্রত বাইন ও অন্যান্য শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিনে মুক্তি পেয়ে ঢাকার মোগবাজার, মতিঝিল, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছিলেন। তারা স্যাটেলাইট কেবল টিভি, ইন্টারনেট সেবা, দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, ফুটপাত, বাজার ও জমি দখলের মাধ্যমে চাঁদাবাজির চেষ্টা করছিলেন।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, “আমাদের সেখানে কোনো অভিযান ছিল না। অন্য কোনো বাহিনী অভিযান চালিয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছি।”
এ.আই/এম.আর

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.