ফরিদপুর, ৩১ মে ২০২৫: ফরিদপুরের নগরকান্দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী বৈশাখী ইসলাম বর্ষা (১৮) রাস্তায় ফেলে মারধরের শিকার হয়েছেন। শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে ভাবুকদিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় সেকেন গাজী, সোহাগ গাজীসহ গাজীগংয়ের কয়েকজন ছিলেন। তারা পূর্বে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা অ্যাডভোকেট জামাল মিয়ার অনুসারী ছিলেন। বর্তমানে তারা বিএনপির নাম ব্যবহার করে এলাকায় সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বর্ষার ছোট বোনকে উত্যক্ত করার অভিযোগে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পর বাড়ি ফেরার পথে তার ওপর এই হামলা চালানো হয়। পরে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে প্রশাসনের সহায়তা চান।
ঘটনার খবর পেয়ে নগরকান্দা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। তবে, গ্রেপ্তারের সময় সেকেন গাজীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী পুলিশের ওপর হামলা চালায়, যাতে কনস্টেবল-ড্রাইভার হান্নু শরীফ গুরুতর আহত হন। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভাবুকদিয়া বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। ফলে অর্ধশতাধিক যানবাহন আটকে পড়ে এবং এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ফরিদপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ বলেন, “এই হামলা বর্ষার মতো একজন সাহসী নারী নেত্রীকে স্তব্ধ করার অপচেষ্টা। এটি নারী, শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক চেতনার ওপর আঘাত। আমরা দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই, তা না হলে ছাত্রসমাজ চুপ থাকবে না।”
নগরকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ সফর আলী বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।”
এ.আই/এম.আর