আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২৪ মে ২০২৫: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের প্রস্তুতি ও রাজনৈতিক-সামরিক সমর্থনের অভাবে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস। তবে, নির্বাচনের জন্য দেশকে প্রস্তুত করতে তিনি প্রত্যাশিত রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, যদি তাঁকে অবাধে কাজ করার সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ড. ইউনূস ইতোমধ্যে পদত্যাগপত্রের খসড়া তৈরি করেছিলেন। তবে, তাঁর উপদেষ্টারা তাঁকে বোঝান যে, এই মুহূর্তে পদত্যাগ দেশকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাম্প্রতিক বক্তব্য, যেখানে তিনি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন, তা ড. ইউনূসের অসন্তোষের অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। ইউনূস মনে করেন, নির্বাচনের জন্য আরও সময় প্রয়োজন, সম্ভবত ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোবাশ্বার হাসান নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, “ড. ইউনূস একজন দক্ষ ব্যাংকার ও প্রতিষ্ঠানের নেতা হতে পারেন, কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্বে তাঁর দৃঢ় ব্যক্তিত্বের ঘাটতি রয়েছে।” তিনি আরও মনে করেন, ইউনূস তাঁর উপদেষ্টাদের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছেন।
এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে ড. ইউনূসের সম্ভাব্য পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। অনেকে মনে করছেন, তাঁর পদত্যাগ দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে। তবে, ড. ইউনূসের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়ব ফেসবুকে বলেছেন, “ড. ইউনূসের ক্ষমতার প্রয়োজন নেই, তবে বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য তাঁর নেতৃত্ব অপরিহার্য।”
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।
এ.আই/এম.আর