by .jpg)
ক্যাম্পাস, ২৭ মে ২০২৫ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে মঙ্গলবার (২৭ মে ২০২৫) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাহবাগবিরোধী ছাত্র ঐক্য মঞ্চ এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষটি ক্যাম্পাসের পরিববন চত্বর ও শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে সংঘটিত হয়।
ঘটনার বিবরণ
শাহবাগবিরোধী ছাত্র ঐক্য মঞ্চ শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিল চলাকালীন গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের মুক্তির প্রতিবাদে মশাল মিছিল বের করে। এ সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
শাহবাগবিরোধী ঐক্য মঞ্চের মিছিলে নেতাকর্মীরা 'শাহবাগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'বামদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না', 'ছাত্রফ্রন্টের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে', 'বিচার চাই, শাহবাগীদের বিচার চাই' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। অন্যদিকে, গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা 'একাত্তর হারেনি, হেরে গেছে হাসিনা', 'চিহ্নিত রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়', 'জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো' ইত্যাদি স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখরিত করেন।
শাহবাগবিরোধী ঐক্যের বক্তব্য
শাহবাগবিরোধী ঐক্যের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম বলেন, "২০১৩ সালে শাহবাগে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে একটি মবতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল, যা ২০২৪ সালে ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে বন্ধ হয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বামপন্থিরা মশাল নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এই হামলার দায় তাদের ওপর বর্তায়।" তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন।
আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, "আমাদের মিছিলে বামপন্থিরা হামলা চালিয়ে আমাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই হামলার বিচার চাই।"
গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের বক্তব্য
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম জানান, "জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের অবৈধ মুক্তির প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ মশাল মিছিল করছিলাম। এ সময় শাহবাগবিরোধী ছাত্র ঐক্য ও শিবিরের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।" তিনি অভিযোগ করেন, শিবিরের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা এই হামলায় অংশ নিয়েছে।
প্রতিক্রিয়া ও প্রেক্ষাপট
এই সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টের মাধ্যমে জানা যায়, ছাত্রদল এই ঘটনায় শাহবাগীদের পক্ষ নিয়েছে। এছাড়া, জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের মুক্তির ঘোষণার প্রতিবাদে বাম সংগঠনগুলোর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে, যা এই সংঘর্ষের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেনি। তবে, ক্যাম্পাসে শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এবং তদন্তের দাবি উঠেছে।
এ.আই/এম.আর
.jpg)
