ঢাকা, ২৫ মে, ২০২৫ : আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমর কবি, সাম্য, প্রেম ও বিদ্রোহের প্রতীক কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৯৯ সালের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই কালজয়ী কবি। ‘দুখু মিয়া’ থেকে ‘বিদ্রোহী কবি’ হয়ে ওঠা নজরুলের জীবন ও সাহিত্য আজও প্রেরণা জোগায়।
দিনটি উপলক্ষে সারাদেশে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠের আয়োজন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
এদিকে, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ২৫ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত কুমিল্লার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই অনুষ্ঠান চলবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী এবং কবির নাতনী খিলখিল কাজী। অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান স্মারক বক্তৃতা দেবেন, এবং জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার স্বাগত বক্তৃতা দেবেন। এছাড়া ‘নজরুল পুরস্কার ২০২৩ ও ২০২৪’ প্রদান করা হবে।
নজরুল ছিলেন প্রেম, বিদ্রোহ, মানবতা ও সাম্যের কবি। তার কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস এবং সংগীত সাম্রাজ্যবাদ, শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। ১৯২২ সালে প্রকাশিত ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা এবং ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার জন্য তিনি কারাদণ্ড ভোগ করেন। মাত্র ২২ বছরের সাহিত্যজীবনে তিনি প্রায় ৪ হাজার গান, অসংখ্য কবিতা, গল্প ও উপন্যাস রচনা করেন। সাহিত্যের পাশাপাশি তিনি সংগীত, চলচ্চিত্র পরিচালনা এবং অভিনয়েও জড়িত ছিলেন।
১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে সপরিবারে আনা হয় নজরুলকে এবং তাকে জাতীয় কবির সম্মান দেয়া হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার ইচ্ছানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।
নজরুলের অমর সৃষ্টি আজও অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রেরণা জোগায়। তার কালজয়ী কণ্ঠ বর্তমান সময়ের অস্থিরতায়ও প্রাসঙ্গিক।
এ.আই/এম.আর