আন্তর্জাতিক ডেস্ক,
২৯ এপ্রিল ২০২৫
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা ১ লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সোমবার এই অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলুকে নিশ্চিত করেছেন রেফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রিপ্যাট্রিশন কমিশনের কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান জানান, গত সপ্তাহে ইউএনএইচসিআর একটি চিঠির মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আগত প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। বর্তমানে এই নতুন শরণার্থীদের অনেকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের আশপাশে তাঁবু গেড়ে বসবাস করছেন, আর কেউ কেউ স্কুল ও মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন। একটি জাতীয় দৈনিকের বরাতে আনাদোলু জানিয়েছে, এই শরণার্থীরা ২৯,৬০৭টি পরিবারের সদস্য, যাদের মধ্যে গত সপ্তাহে এসেছে ১,৪৪৮টি পরিবার। এদের অধিকাংশই রাখাইনের বাসিন্দা, যারা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইউএনএইচসিআর নতুন আগত সকল রোহিঙ্গাকে শিবিরে আশ্রয় দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেও বাংলাদেশ এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। মিজানুর রহমান আনাদোলুকে বলেন, “এভাবে ক্রমাগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া চলতে থাকলে মিয়ানমারে তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে পড়বে।”
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) পুলিশ ও সেনা ছাউনিতে হামলা চালায়। এর জবাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় নৃশংস অভিযান শুরু করে। নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। বাংলাদেশ সরকার তাদের কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে আশ্রয় দেয়, এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা সংস্থা খাদ্য ও সহায়তা প্রদান শুরু করে। বর্তমানে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ১৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছেন।
গত এক বছর ধরে রাখাইনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও জান্তাবিরোধী আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। আরাকান আর্মি বর্তমানে রাজধানী সিতওয়ে ব্যতীত রাখাইনের প্রায় সব এলাকা ও বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল বাংলাদেশে আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এ.আই/এম.আর