জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকা
নকশায় রেস্তোরাঁর জন্য অনুমোদন না থাকা ভবনগুলোতে পরিচালিত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। তারা এটিকে “একতরফা” এবং “ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতিকর” আখ্যায়িত করে আইনি পদক্ষেপ, সড়ক অবরোধ এবং দেশব্যাপী রেস্তোরাঁ বন্ধের হুমকি দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সমিতির সভাপতি মো. ওসমান গণি এবং মহাসচিব ইমরান হাসানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত হাজারো ব্যবসায়ী ও তাদের জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। সমিতি জানায়, একটি রেস্তোরাঁ শুরু করতে ১৪টি সংস্থার অনুমোদন নিতে হয়, যা উদ্যোক্তাদের জন্য হয়রানির কারণ। তবুও, তরুণ উদ্যোক্তারা এই খাতে বিনিয়োগ করে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখছেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৪.৮১ লাখ রেস্তোরাঁ রয়েছে, যেখানে ৩০ লাখ মানুষ কর্মরত। এই খাতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশ, বিনিয়োগের পরিমাণ ২ লাখ কোটি টাকা এবং মোট আয় ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২ কোটি মানুষ এই খাতের উপর নির্ভরশীল।
সমিতি সতর্ক করে বলেছে, ডিএসসিসির এই হঠকারী সিদ্ধান্ত ব্যাংক ঋণ নিয়ে বিনিয়োগকারী মালিকদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলবে। বিবৃতিতে বলা হয়, “এই সিদ্ধান্ত বিনিয়োগের অবমূল্যায়ন করবে এবং হাজারো ব্যবসায়ী পরিবারকে পথে বসাবে। বিশেষ করে, লিজ ও সংস্কারে বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি বিরাট আর্থিক সংকট সৃষ্টি করবে।”
ডিএসসিসি জানিয়েছে, দ্য মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (ট্যাক্সেশন) রুলস, ১৯৮৬ অনুযায়ী, ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন। বর্তমানে তাদের এলাকায় ১,০২৬টি রেস্তোরাঁ বৈধ লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছে। তবে, নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদনহীন রেস্তোরাঁ, বিশেষ করে ছাদে পরিচালিত ব্যবসাগুলোর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সমিতি দ্রুত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং আলোচনার মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, “অন্যথায়, আইনি পদক্ষেপ, সড়ক অবরোধ ও দেশব্যাপী রেস্তোরাঁ বন্ধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। যেকোনো নাগরিক অসন্তোষ বা অস্থিরতার দায় ডিএসসিসির উপর বর্তাবে।
এ.আই/এম.আর