ঢাকা গেট, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, রাজধানী ঢাকায় ছাত্রজনতা ও সক্রিয় কর্মীরা ভারতজুড়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর মুসলমানদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আয়োজনে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে জুমার নামাজের পর এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীরা ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর, ফিলিস্তিন এবং আরাকানের স্বাধীনতার দাবি জানায়, এই অঞ্চলগুলোতে মুসলমানদের নিপীড়ন বন্ধের আহ্বান জানায়। তারা “ফ্রি ফ্রি কাশ্মীর,” “ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন,” “ফ্রি ফ্রি আরাকান,” “বিশ্ববাসী এক হও, গাজা দখল রুখে দাও,” “দুনিয়ার মুসলিম এক হও, লড়াই করো,” এবং ভারত, ইসরাইল ও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে “কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও” স্লোগান দেয়।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভে বক্তৃতা করেন যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব এবং বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ।
শামসুদ্দিন বলেন, ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমান বসবাস করে, কিন্তু ভারত ফিলিস্তিনে মুসলমানদের গণহত্যায় ইসরাইলের সঙ্গে যোগ দিয়েছে এবং ওয়াকফ বিলের নামে মুসলমানদের ধর্মীয় সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার মুসলমানদের ক্ষোভ শান্ত করতে ব্যর্থ হয়ে কাশ্মীরে ২৭ জন পর্যটক হত্যার ঘটনায় মুসলমানদের দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে হামলা উসকে দিয়েছে। তিনি বলেন, “কাশ্মীরসহ সারা ভারতে মুসলমানেরা গেরুয়া সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার। এই সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে এবং হিন্দুত্ববাদীদের শাস্তি দিতে হবে।”
তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নারী কমিশনের ইসলামবিরোধী সুপারিশেরও সমালোচনা করেন, অভিযোগ করে বলেন, ভারতের গোপন দালালরা এনজিও’র সঙ্গে মিলে মোদি সরকারের মতো ইসলামী আইনের পরিবর্তে অভিন্ন পারিবারিক আইন চাপিয়ে দিতে চায়। তিনি কমিশন ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান।
সাইয়েদ কুতুব বলেন, মুসলমানরা যুদ্ধ করে ভারতকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করেছিল, কিন্তু এখন হিন্দুত্ববাদীরা তাদের ওপর গণহত্যা ও উচ্ছেদ চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “ভারতের মুসলমানদের মুছে ফেলার পরিকল্পনা কখনো সফল হবে না। ফিলিস্তিন স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ভাইদের লড়াই চলবে। এই লড়াই শুধু ফিলিস্তিনের নয়, প্রতিটি মুক্তিকামী মানুষ ও মুসলমানের।”
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, দুই দিন আগে কাশ্মীরে মোদি সরকার জঙ্গি নাটক সাজিয়ে মুসলমানদের গ্রেপ্তার করছে, যা জায়োনিস্ট ও হিন্দুত্ববাদের যৌথ ষড়যন্ত্র। তিনি সবাইকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
বিক্ষোভে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. তোফায়েল আহমেদ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ.আই/এম.আর