ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ – বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সম্প্রতি এফডিআর থেকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর নিয়ে উত্থাপিত আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগের জবাবে একটি বিস্তারিত বিবৃতি জারি করেছে। ক্রিকেট মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেওয়া এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে বোর্ড পরিচালকদের সাথে আলোচনা ছাড়াই টাকা স্থানান্তরের অভিযোগ।
শনিবার প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি এই অভিযোগগুলোকে "ভুল তথ্যভিত্তিক এবং বোর্ড ও এর সভাপতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত" বলে উড়িয়ে দিয়েছে। বোর্ড জানিয়েছে, ১৪টি ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং অতীতের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্পদ সুরক্ষার জন্য কৌশলগত পদক্ষেপের অংশ ছিল।
বিসিবির মতে, ২০২৪ সালের আগস্টে সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর ফারুক আহমেদ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণআন্দোলনের পর দেশের অর্থনৈতিক সংকট এবং ব্যাংকিং সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়নের ভিত্তিতে আর্থিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিসিবি শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের "গ্রীন" ও "ইয়েলো" জোনভুক্ত ব্যাংকগুলোর সাথে লেনদেনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়, যার মধ্যে ২৩৮ কোটি টাকা নিরাপদ ব্যাংকগুলোতে পুনঃবিনিয়োগ করা হয় এবং বাকি ১২ কোটি টাকা পরিচালনা ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।
বিসিবি স্পষ্ট করেছে যে সভাপতি এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। আর্থিক লেনদেনে স্বাক্ষরকারী হিসেবে রয়েছেন ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা এবং টেন্ডার ও পারচেজ কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম, যেখানে সভাপতির স্বাক্ষরের ক্ষমতা নেই।
বোর্ড আরও জানিয়েছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকে স্থায়ী আমানত রাখার ফলে পূর্বের তুলনায় ২-৫% বেশি মুনাফা অর্জিত হয়েছে। গত ছয় মাসে তিনটি ব্যাংকিং অংশীদার থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকার স্পনসরশিপ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ২০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।
কিছু সুবিধাভোগী ও ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ তুলে বিসিবি বলেছে, "ক্রিকেট প্রশাসনের ভেতরেও সক্রিয় এই গোষ্ঠীগুলো বোর্ডের ক্ষতি করতে কাজ করে যাচ্ছে।" বোর্ড সর্বোচ্চ আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তথ্যভিত্তিক তদন্তকে স্বাগত জানায়। একই সঙ্গে, গণমাধ্যমকে ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে বিসিবি।
এ.আই/এম.আর